উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের মহারাজার অর্থগ্রাম শ্রী শ্মশানকালীর পুজো কমিটি প্রান্তিক এলাকায় হলেও ভক্তি ও আস্থার কারণে প্রতি বছর পুজোর দিনে ভক্তদের ঢল নামে সেখানে। দূর দুরন্ত থেকে আসে এই বিশেষ দিনে ভক্তরা। তিথি অনুযায়ী এবার সেই পুজো হতে চলেছে ১১ই নভেম্বর ২০২৪। স্বভাবতই সাজো সাজো রব মন্দির প্রাঙ্গণ জুড়ে। উল্লেখ্য ১৯৬৯ সাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন অন্যতম কর্মকর্তা পঙ্কজ বর্মন। তিনি জানান দীর্ঘদিন যাবৎ এই পূজা হয়ে আসছে, বাবা ঠাকুরদারা বিগত কালে মেতে থাকতো এই পূজোয়, তাদের দেখানো পথেই এই পুজো করে আসছেন এই প্রজন্ম। আগে এই মায়ের পুজো দীর্ঘদিন যাবৎ শ্মশানেই হত, কিন্তু বর্তমানে এই পূজা হয় ঐ শ্মশান থেকেই প্রায় একটু দূর, মন্দির তৈরি করা হয় ঐ শ্মশান থেকেই প্রায় ৭০ মিটার দূরে, সেই মন্দিরেই বর্তমানে পূজা হয় শাস্ত্রীয় রীতিনীতি মেনে।
কমিটি সূত্রে জানাযায়, খুব নিয়মনিষ্ঠা করে এই পূজা সম্পন্ন হয়, পূর্বতন প্রথা অনুযায়ী শ্মশানের মন্দিরে বর্তমানে পূজা না হলেও, শ্মশানের পুরোনো মন্দিরেই এই পূজা প্রথমে করতে হয়, তাও নাকি সোলমাছ পুড়িয়ে, কারণ ও সিদ্ধি দিয়ে ভোগ নিবেদন করতে হয়। এবং শ্মশানে পূজা হবার পর মূল মন্দিরে রাতভর এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
কথিত আছে মা শ্মশান কালী নাকি একটু একা আর নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করেন, কিন্তু মহারাজার এই মায়ের ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন, মন্দিরের পাশেই রয়েছে বাজার, দোকান পাট ও সারাক্ষণই মানুষের আনাগোনা, মা নাকি তাতেই খুশি।
অনেকেই মানত করে ফল পেয়েছে, ভক্তি ভরে ডাকলে মা কাউকে নিরাশ করেনা না।
পঙ্কজ বাবু আমাদের জানান- এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এই মন্দিরেই গড়ে তোলা হয়েছে। কালী মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে ৰজরণবলীর মন্দির ও শিব মন্দির। মন্দিরের বাইরে রয়েছে বেলগাছ, একদিকে রয়েছে বট পাকুরের গাছ, একটি তুলসী বেদি, রয়েছে একটি বিশাল আকৃতির রথ, সব শেষে একটা জাগজমক পরিবেশ।
অপর এক সদস্যা সোমা চক্রবর্তী আমাদের জানান দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা পুজো দিতে আসেন এখানে। পুজোর আগে থেকেই চলে মন্দির জুড়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ, চলে মন্দির জুড়ে আলপনা দেওয়া। রাতভর চলে পুজো। প্রাচীন রীতি মেনে শ্মশান মন্দিরে শোলমাছ দিয়ে ভোগ নিবেদন করতে হয় তারপর এখানে পুজো শুরু হয়।
অপর এক সদস্য সুব্রত দাস বলেন প্রতি বছরের মত এবারও পুজোর পাশাপাশি ক্ষুদে শিল্পী দের দ্বারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ভক্তির পাশাপাশি ক্ষুদেদের প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে এই আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

