পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৪ সেপ্টেম্বর —— ৪৭ নয় ১৯৪২ এই স্বাধীনতার প্রথম স্বাদ পেয়েছিল বালুরঘাট। ১৪ সেপ্টেম্বরের এই দিনটিতেই মাত্র তিনদিনের জন্য বালুরঘাট শহরে উড়েছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। স্বাধীনতা আন্দোলনের সেই ইতিহাসকে স্মরণ করতে আজো এই দিনটিকে বালুরঘাট দিবস হিসাবেই পালন করেন এই শহরের বাসিন্দারা। শনিবার বালুরঘাটের ডাঙ্গি এলাকায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে শহীদদের স্মৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল। যেখানে অনান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। শুধু তাই নয়, ক্ষুদিরামের মূর্তিতে মাল্য দান করে এদিন একটি মিছিলও করে বালুরঘাট দিবস উদযাপন কমিটি। এরপরেই বালুরঘাটের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে থাকা ১৯৪২ এর শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি স্মৃতিস্তম্ভের সামনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় জেলা প্রশাসনের তরফে। জানা যায়, ১৯৪২ এ ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় বালুরঘাটের স্বাধীনতা সংগ্রামী সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ও পুলিন বিহারী দাশগুপ্তের নেতৃত্বে শহর লাগোয়া ডাঙ্গি এলাকা থেকে একটি বিরাট মিছিল বের হয়েছিল। ১৪ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের যে মিছিলটিই কালেকটরেট অফিসে পৌঁছে ইংরেজদের ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে তুলে দিয়েছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। বিপ্লবীরা একত্রিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে বাধ্য করেছিল ইংরেজ সৈন্যদের পিছু হটতে। তিনদিনের জন্য স্বাধীন হয়েছিল বালুরঘাট। যে ঘটনাই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে পঞ্চম স্থান লাভ করেছে। সেই আন্দোলন করতে গিয়েই প্রাণ গিয়েছিল বহু মানুষের। স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন এক অবিস্মরণীয় ঘটনাকে স্মরণ করেই প্রতিবছর বালুরঘাটবাসী ১৪ সেপ্টেম্বর দিনটিকে বালুরঘাট দিবস হিসাবে পালন করে থাকেন। সেই মতো এদিনও বালুরঘাট দিবস পালিত হয় শহরে।
বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে বালুরঘাট ও এই শহরের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ভুমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই ইতিহাসটি নবপ্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই আজো এই দিনটিকে একটা বিশেষ দিন হিসাবে পালন করে আসছেন তারা।

