উড়িষ্যা রাজ্যের বালাসরে ট্রেন দুর্ঘটনার একমাস পরে গঙ্গারামপুর ব্লকের বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী আরাজি লালচাঁদপুরে ফিরে এল, শোকাহত সকলেই

উত্তরবঙ্গ কলকাতা খেলা দক্ষিণবঙ্গ দেশ প্রথম পাতা বিদেশ বিনোদন রবিবার রাজ্য শরীর ও স্বাস্থ্য

গঙ্গারামপুর,৪ জুলাই : ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় এক মাস পর কফিনবন্দি হয়ে যুবকের দেহ ফিরল গ্রামের বাড়িতে। ঘটনায় গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গঙ্গারামপুর ব্লকের বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তবর্তী আরাজি লালচাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা রমাকান্ত রায়। স্ত্রী সহ দুই ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। কৃষি কাজ করে রমাকান্ত কোনো রকমে সংসার টানেন। বাবার কষ্ট দুর করতে রমাকান্তের প্রায় ২১ বছর বয়সি ছেলে সুমন রায় ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাছ উদ্দ্যেগ নেয়। গত মাসের ২ তারিখে গঙ্গারামপুর ব্লকের আরাজি লালচাঁদপুরে গ্রামের পাঁচ যুবক সুমন রায় (২২),জয়ন্ত রায় (১৮),বিপ্লব রায় (২১) মনোজ রায় (১৯) ও সুমন রায় (২১) চেন্নাইয়ে কাজ করতে যাবার উদ্দ্যশ্যে দেয় । কিন্তু ৩ জুন ওড়িশার বালেশ্বরে করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুর্ঘটনা কবলে পড়ে। ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রায় লালচাঁদপুরে ২২ বছর বয়সি সুমন রায়ের। জখম হয় জয়ন্ত রায়,বিপ্লব রায় ও মনোজ রায়। কিন্তু ঘটনার পর নিঁখোজ ছিল ২১ বছর বয়সি অপর এক সুমন রায়। ওড়িশার বালেশ্বরে নিয়ে একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে ছেলে খুঁজেছিলেন রমাকান্ত বাবু। ছেলেকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে পরিবারের লোকজন ডিএনএ পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরেন। তারপর প্রায় কেটে গিয়েছে প্রায় এক মাস। গত রবিবার থানার মাধ্যমে ছেলের সন্ধান পান রমাকান্ত। ছেলের খবর পেয়ে সেদিনই ওড়িশায় ছুটে যান। এদিন তার ছেলের কফিনবন্দি দেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন রমাকান্তের পরিবার। এক মাস পর সুমনের কফিনবন্দি দেহ ঘরে ফিরতে গ্রামে জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত সুমনের বাবা রমাকান্ত রায় বলেন,ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পাবার পর ওড়িশায় গিয়ে ছিলাম। আমাদের গ্রামের চারজনকে পাওয়া গেলেও আমার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখুঁজি করেও তাকে খুঁজে পাইনি। ছেলেকে খুঁজে পেতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রক্ত দিয়ে এসেছিলাম। তারপর কোনো খোঁজ খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। ভেবে ছিলাম ছেলে হয়তো একদিন বাড়ি ফিরে এসে আমাদের ডাকবে। কিন্তু ছেলের দেহ বাড়ি আসবে ভাবতে পারছি না। ছেলের দেহ ঘরে ফিরতে কান্না ভেঙে পড়েন মা অষ্ঠমী রায়। ছেলের শোকে মাঝে মধ্যে ঞ্জান হারিয়ে ফেলছেন। বলে চলেছেন বাবা কেন যে বাইরে গেলি। আমাদের কষ্ট দুর করার জন্য ভিনরাজ্য গিয়ে এমন হবে জানতে যেতে দিতাম না। ঊষা রায় বলেন,দাদার একটু কষ্ট দুর করার জন্য ভাইপো এক মাস আগে কাজ করতে চেন্নাই যাচ্ছিল। যাবার পথে ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।খবর পাবার পর ওড়িশায় গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখুঁজি করে ছিলাম। তাকে পাইনি। আজকে ভাইপোর দেহ বাড়িতে এলো। দাদার সব শেষ হয়ে গেল। জেলার সংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি ডক্টর সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, আমরা সব সময় সকলের পাশে ওই দুর্ঘটনার সময় ছিলাম আগামীদিনেও ওই পরিবারের পাশে থাকা হবে। সরকারি সহযোগিতা যা পাবেন তার ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *