স্বাধীনতার ৭৭বছরেও গঙ্গারামপুর থানার পাশে শহীদ প্রফুল্ল চাকির নাতনির দিন কাটছে অর্ধাহার অনাহারে একটি ছোট কুড়ে ঘরের মধ্যে,জমি দখল হয়েছে তাঁর-জীবনে বাঁচতে প্রশাসন সহ সকলের কাছে সাহায্যের আবেদন-ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস প্রশাসনের

উত্তরবঙ্গ কলকাতা খেলা দক্ষিণবঙ্গ দেশ প্রথম পাতা বিদেশ বিনোদন রবিবার রাজ্য শরীর ও স্বাস্থ্য

গঙ্গারামপুর ১৫ আগষ্ট দক্ষিণ দিনাজপুরু        :——————–—দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে ৯৭ বছরের বয়স্ক শহীদ প্রফুল্ল চাকির নাতনি মাধবি তালুকদারের দিনগুঞ্জন চলছে অর্ধাহার অনাহারে পিডাবলুডির জায়গার উপরে একটি ছোট কুড়ে ঘরে।নিজের জায়গা ছিল তাও দখল করে নিয়েছে বামেদের আমলে বেশ কয়েকজন বলে অভিযোগ তাঁর।বর্তমানে লোকজনদের কাছ থেকে চেয়ে চিন্তে প্রতিবন্ধী এক ছেলেকে নিয়ে কোন মতে বেঁচে আছেন তিনি।স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরেও পাননি যেমন সরকারী কোন ঘর,নির্মল পৌরসভা ঘোষনা হয়েছে কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতনীর কুড়োঘরে নেই কোন শৌচাগার। তাই ভরসা করতে হয় অন্যের পরিবারে যেতে। ঘটনাটি অবশ্য আর কোথাও নয় খোদ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার পাশেই এলেই তাঁর সেই কুড়ো ঘরটি দেখতে পাওয়া যাবে। তাঁর দাবি, যদি সরকার থেকে একখানি ঘর দিত,যদি দুমুঠো খাবার পেটভরে ভেতে পারতাম, তবেই মনে আনন্দ আসত। প্রতিবেশীরাও ওনার এমন করুন দশায় হতবাক সকলেই। তারাও চান যেন সরকার ওনার দিকে মুখ তুলে তাকায়। পৌরসভা ও প্রশাসনের তরফে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যানা গিয়েছে ২৫/২৭বছর ধরে এই কুড়োঘরে তিনি বসবাস করছেন প্রফুল্ল চাকির নাতনি মাধবি দেবী৷চেয়ে চিন্তে কোন মতে বেঁচে আছেন তিনি। প্রফুল্ল চাকী আপনার কে হয় বলে প্রশ্ন করাতেই তিনি উত্তর দিলেন, আমার মায়ের ছোট কাকা হন তিনি।আমার মায়ের বাবার (দাদুর)নাম প্রতাপ চাকি, তার বাবার নাম রাজ নারায়ণ চাকি। প্রফুল্ল চাকিকে আপনি দেখেছেন কি কখনও? উত্তর দেন নাতনি মাধবি দেবীদেখেছেন খুব ছোট বেলায় বিহারের আচরাই বগুড়া জেলাতে।মাটির বাড়িতে তিনি থাকতেন।দেশ স্বাধীনের জন্য তাঁর অবদান কম নয়।
প্রফুল্ল চাকীর নাতনি মাধবি তালুকদার জানালেন, অনেক পুরনো ইতিহাসের কথা।শহীদ প্রফুল্ল চাকির নাতনি মাধবি তালুকদারের কাছ থেকেই যানা গিয়েছে,যে সময়ের ঘটনায় ক্ষুদিরাম বসু পুলিশের হাতে ধরা পরেছিল ও তাঁর মৃত্যুদ্বন্দ হয়েছিল।কিন্তু তাঁর দাদু প্রফুল্ল চাকি টেন থেকে পুলিশকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে নিজে পিস্তল দিয়ে গুলি করে নিজেই আত্মহত্যা করেছিলেন বলে নাতনি মাধবি তালুকদার দাবি করেন।
শহীদ প্রফুল্ল চাকির নাতনি মাধবি তালুকদার জানালেন, বহু দিন আগের কথা।তিনি বলেন,ছোট বেলায় আমার মা মারা গেছেন। তাঁর পর থেকেই মামাদের বাড়িতে থেকেই বড় হয়। পুর্ববঙ্গের শান্তাহার রাইটে তাঁর আরেক মামা হীরেন চাকী মারা গিয়েছেন বলে নাতনি মাধবি তালুকদার দাবি করেন।
প্রফুল্ল চাকির নাতনিকে মাধবি তালুকদারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনি কিছু পেয়েছেন কি?তিনি উত্তর দেন কিছুই পায়নি। তাই ভাঙ্গা কুড়োঘরে পিডাবলুডি জায়গার উপরে রয়েছেন তিনি দির্ঘদিন ধরে।নেই শৌচাগার ও পথবাতিও।ঘর পাননি জায়গা নেই বলে।খেতে কষ্ট,পড়তে কষ্ট,শৌচকর্ম করতে অন্যের বাড়িতে যেতে হয় তাঁকে। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে প্রতিবন্ধী অপর ছেলে চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার চালান। তবে নিয়ম করে প্রতিবছর তিনি স্বাধীনতা দিবসের দিনে জাতীয় পতাকা উত্তেলনটা দেখেন।যদি সরকার একটু আমার দিকে মুখ তুলে তাকাতো তাহলে ভালোই হত।
তাঁর প্রতিবন্ধী ছেলে দুঃখ প্রকাশ করে জানালেন, কি আর বলব সরকার আমাদের দিকে মুখ তুললেই বেচে যেতাম। কিন্তু সেটা হল কোথায়?
শহীদ প্রফুল্ল চাকির নাতনি মাধবি তালুকদারের এক প্রতিবেশী মিলন মজুমদার জানালেন, যাদের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি তাঁর পরিবারের এক সদস্যের এমন দশা বিষয়টি দেখার অনুরোধ করছি।
গঙ্গারামপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসন সুত্রে যানা গিয়েছে, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
এখন দেখার এটাই যে,স্বাধীনতার ৭৭ বছরেও স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের এক সদস্য সরকারি সহযোগীতাটুকু প্রায় কিনা সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে সকলেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *