, বালুরঘাট, ৭ এপ্রিল ——–– শিলান্যাসের ছয় মাস পরেও তৈরি হয়নি রাস্তা। প্রতিবাদে দুদিন ধরে অবরোধ রাজ্য সড়ক। বেকায়দায় প্রশাসন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এলাকায় পৌছাতেই গ্রামবাসীদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূল বিধায়ক ও বিডিও। শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুলন্তাপাড়া এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছায় কুমারগঞ্জ থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। যদিও পরবর্তীতে এক মাসের মধ্যে রাস্তা তৈরির আশ্বাস দিয়ে গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করে দুদিন পর রাস্তা অবরোধ তুলতে সক্ষম হয় প্রশাসন।
জানা যায় কুমারগঞ্জ ব্লকের রামকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সাহা পুকুর থেকে সুলন্তপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৩০০ মিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিনের। যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বর্ষাকাল তো বটেই অন্যান্য সময় ও চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই এলাকার বাসিন্দারা। যে সমস্যা উপলব্ধি করে প্রায় ছমাস আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে ওই রাস্তার শিলান্যাস করেন স্থানীয় বিধায়ক সহ তৃণমূল নেতৃত্বরা। বসানো হয় একটি ফলকও। কিন্তু তারপরে দীর্ঘ ছয় মাসেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও তৈরি হয়নি কোন রাস্তায়। যা নিয়েই অনেকের অভিযোগ, রাস্তা তৈরী না করেই টাকা তুলে খেয়ে নিয়েছে কেউ বা কাহারা। এদিকে পথশ্রী প্রকল্পে এলাকায় অনান্য রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সুলন্তাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। তাদের রাস্তা কেন তৈরি হচ্ছে না এই দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সমজিয়া-বালুরঘাট রাজ্যসড়কে বাশ ফেলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কয়েকশো বাসিন্দারা। ঘটনার খবর পেয়ে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ এলাকায় গেলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেনি। পরবর্তীতে ব্লকের জয়েন্ট বিডিও এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করলেও কোনোভাবেই স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। শিলান্যাস এর পরেও কেন রাস্তা তৈরি হলো না, তার জবাব এলাকায় গিয়ে বিধায়ক ও বিডিওকেই দিতে হবে এই দাবিতে অনড় থাকে বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার রাতভর রাস্তা আটকে রেখেই বিক্ষোভ চালায় বাসিন্দারা। সারারাত এলাকায় মোতায়েন থাকে পুলিশও। শুক্রবার সকাল থেকে একইভাবে রাস্তা আটকে রেখে বিক্ষোভ চালাতে থাকে বাসিন্দারা। যার জেরে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে প্রশাসন। এরপরেই প্রচুর পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় হাজির হন কুমারগঞ্জের বিডিও ছেয়াং তামাং ও বিধায়ক তোরাব হোসেন মন্ডল। যাদের দেখতে পেয়েই তুমুল ক্ষোভ উগড়ে দেন গ্রামবাসীরা। একদিন পরে কেন তারা হাজির হলেন এলাকায়? এই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখান তারা। যদিও পরে উভয়ের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একমাসের সময়সীমা বেধে দিয়ে রাস্তা অবরোধ তোলেন বাসিন্দারা।
বিক্ষোভকারী স্বপন রবিদাস, সুইটি মন্ডল, জামিরা বিবিরা বলেন, ছয় মাস আগে রাস্তার শিলান্যাস হয়েছে। কিন্তু তার পরেও কেন রাস্তা তৈরী হচ্ছে না। বেহাল রাস্তা দিয়ে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছেনা। যার প্রতিবাদে দুইদিন ধরে তারা রাস্তা অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। আগে রাস্তা পরে ভোট, রাস্তা না হলে তারা ভোট বয়কটে যাবেন। প্রশাসন একমাসের সময়সীমা দিয়েছে রাস্তা তৈরির জন্য। তারপরেও ঠিক না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাস্তা অবরোধে সামিল হবেন।

