বালুরঘাট, ১৮ সেপ্টেম্বর ——- শিক্ষার আসরেই কলঙ্কের দাগ! দক্ষিণ দিনাজপুরের এক নামী স্কুলে নৈশপ্রহরীর বিরুদ্ধে উঠল মধুচক্র চালানোর মতো বিস্ফোরক অভিযোগ। রাতের অন্ধকারে সিসিটিভি বন্ধ করে ভেতরে ঢুকেছিল বহিরাগত। যা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই চারদিকে। অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাতে এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট ব্লকের বাদামাইল লক্ষ্মীপ্রতাপ উচ্চ বিদ্যালয়ে। বহু পুরনো এই স্কুলের অস্থায়ী নৈশপ্রহরী কানু দেবনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে ভেতরে মহিলা ও পুরুষদের প্রবেশ করাতেন। বুধবার রাতে স্কুল প্রাঙ্গণে এক বিধবা মহিলাকে ঢুকতে দেখা যেতেই সন্দেহ ঘনীভূত হয়। যে খবর পেয়ে মহিলার বাড়ির লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।
অভিযুক্ত নৈশপ্রহরী অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “মধুচক্রের প্রশ্নই ওঠে না। ওই মহিলার বাড়ির রাস্তা খারাপ। শর্টকাট দিতে স্কুলের ভেতর দিয়ে তাঁকে বার করছিলাম। তাই সাময়িকভাবে সিসিটিভি বন্ধ করি।” কিন্তু স্থানীয়রা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—অনেকদিন ধরেই এমন কাজ চলছিল গোপনে।
চাঞ্চল্যকর যে অভিযোগ সামনে আসতেই দ্রুত নড়ে বসে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাদামাইল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার লাহিড়ী বলেন, “অভিযোগ শোনামাত্রই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত হবে।”
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কৌশিক তালুকদারও বলেন, “স্কুল চত্বরে অসামাজিক কাজ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
যদিও এত বড় অভিযোগ সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ জমা হয়নি। এই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, “এমন লজ্জাজনক ঘটনায় শুধু স্কুল নয়, গোটা এলাকার মানহানি হচ্ছে। পুলিশে অভিযোগ না জানালে এর শাস্তি হবে না।”
বাদামাইল লক্ষ্মীপ্রতাপ হাইস্কুল বরাবরই জেলার গর্ব—খেলাধুলা থেকে সাংস্কৃতিক জগতে নাম কুড়িয়েছে বহুবার। কিন্তু এবার সেই ঐতিহ্যই যেন প্রশ্নের মুখে। এক নৈশপ্রহরীর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ শুধু স্কুল নয়, শিক্ষা ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়েও নতুন করে ভাবাচ্ছে অভিভাবকদের।

