৩১ আগষ্ট —–জেলা তৃণমূল সভাপতির খাসতালুকে সমবায় নির্বাচন ঘিরে রণক্ষেত্র বংশীহারির পাথরঘাটা। রবিবার ভোট চলাকালীনই রাস্তায় নেমে খোলা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল ও বিজেপি। পুলিশের সামনেই বিজেপি কর্মীদের উপর বেধড়ক হামলার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। পাল্টা অভিযোগ তোলে তৃণমূল—পরাজয় আঁচ করেই অশান্তি ছড়াতে মরিয়া হয়েছিল বিজেপি। ঘটনায় উভয় শিবিরের অন্তত ছয়জন জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
জানা যায়, বংশীহারির সুদর্শননগর হাইস্কুলে রবিবার দিলকণ্ঠী সমবায় সমিতির ছয় আসনে ভোট গ্রহণ হচ্ছিল। ভোটার সংখ্যা প্রায় ৯৮২। বিজেপির অভিযোগ, জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়ালের এলাকায় যেকোনও মূল্যে সমবায় দখল করতে মরিয়া ছিল তৃণমূল। সকাল থেকেই বহিরাগতদের এনে বিজেপি প্রার্থীদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। অভিযোগ, বিজেপি ভোটারদের ভোটাধিকার কাড়তে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পরিকল্পিতভাবে পথে নেমে পড়ে। প্রতিবাদে বিজেপি রাস্তা অবরোধ করলে, তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শাসক সমর্থকরা। গুরুতর আহত হন চারজন বিজেপি কর্মী। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, “ভাওয়ালের নিজের এলাকায় হারের ভয়ে বহিরাগতদের এনে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের কর্মীদের বেধড়ক মারধর করানো হয়েছে। গুরুতর জখম চারজন। তাই আমরা ভোট বয়কট করে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।”
অন্যদিকে শাসক শিবিরের দাবি, বিজেপি পরাজয় নিশ্চিত জেনে সকাল থেকেই অশান্তি পাকানোর ছক কষে। ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেয় গেরুয়া শিবির। সেই প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হলে, উল্টে বিজেপিই তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা চালায়। ঘটনায় গুরুতর জখম হন দু’জন তৃণমূল সমর্থক।
জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়ালের সাফ কথা, “বিজেপি জানে এই সমবায়ে তাদের হার অবধারিত। তাই অহেতুক ঝামেলা পাকিয়ে আমাদের দু’জন কর্মীকে মারধর করেছে। তবু পুলিশকে ভরসা করে শান্তিপূর্ণভাবেই আমরা নির্বাচন শেষ করেছি।
দিনভর উত্তেজনা, সংঘর্ষ আর অভিযোগ–পাল্টা অভিযোগে থমথমে ছিল পাথরঘাটা। তবে সমস্ত নাটকীয়তার শেষে ছয় আসনই দখল করে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি ভোট বয়কট করলেও রক্তাক্ত সংঘর্ষের আঁচে ফের প্রমাণ হল—দক্ষিণ দিনাজপুরের গ্রামীণ রাজনীতিতে সমবায় নির্বাচনও আর নিছক ‘ভোট’ নয়, বরং প্রাণপণ দখলদারির লড়াই।

