বালুরঘাট, ২৪ সেপ্টেম্বর ——— ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু বিজেপির মহিলা মোর্চার মন্ডল সভাপতির! প্রতিবাদে হাসপাতাল সুপারের পদত্যাগের দাবি তুলে দফায় দফায় বিক্ষোভ বিজেপি নেতা কর্মীদের। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বিক্ষোভকারী বিজেপির নেতা কর্মীরা এদিন প্রথমে নার্সদের ঘেরাও করেন এবং তারপরে হাসপাতাল সুপার অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। যদিও ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পৌছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে বালুরঘাট থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। ঘটনা জানিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও হাসপাতাল সুপারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের মৃতার পরিবারের লোকেদের
পুলিশ জানিয়েছে মৃত ওই মহিলার নাম মামনি বর্মন, বয়স ৩৫। বাড়ি বালুরঘাট থানার চকরাম গ্রামে। ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য হবার পাশাপাশি বর্তমানে বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মহিলা মোর্চার সদস্য ও এক নম্বর মন্ডলের সভাপতি পদেও ছিলেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রের খবর অনুযায়ী, সোমবার রাতে অসহ্য পেটের যন্ত্রণা নিয়ে তাকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবারের লোকেরা। যারপর তাকে বিনা চিকিৎসাতেই কয়েক ঘন্টা হাসপাতালে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ তার পরিবারের লোকেদের। পরবর্তীতে তাকে একটি ইঞ্জেকশন দিতেই ওই মহিলা নেত্রীর শরীরে শুরু হয় অসহ্য জ্বালা ও যন্ত্রণা। এর কিছু পরেই মৃত্যু হয় তার। আর এরপরেই এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতর পরিবার সহ বিজেপির নেতা কর্মীরা। তাদের অভিযোগ ভুল ইনজেকশন দেওয়ার কারনেই ওই মহিলা নেত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরিবারের লোকেদের আরো অভিযোগ ইনজেকশন দেবার পরে রোগীর মৃত্যু হতেই তড়িঘড়ি চিকিৎসক প্রেসক্রিপসনে লেখা ওই ইনজেকশনটি কেটে দেন। যা থেকেই প্রমাণিত ওই চিকিৎসক ভুল ইনজেকশন দিয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। এদিন যে ঘটনাকে ঘিরে হাসপাতালের ভেতরে প্রথমে নার্সদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা কর্মীরা। পরবর্তীতে হাসপাতাল সুপারের পদত্যাগের দাবি তুলে সুপার অফিস ঘেরাও করে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। যে খবর পেয়ে বালুরঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌছে স্বাভাবিক করে পরিস্থিতি। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে চিকিৎসক দেবাশীষ বিশ্বাস ও হাসপাতাল সুপারের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা মাফিক খুনের অভিযোগ তুলেছেন মৃতার পরিবারের লোকেরা। তাদের অভিযোগ, ভুল ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে মামনিকে। ঘটনা জানিয়ে বালুরঘাট থানা ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত মহিলা নেত্রীর ভাই কর্ন বর্মন।
কর্ণ বর্মন বলেন, ইঞ্জেকশন দেবার পরে দিদির মৃত্যু হতেই চিকিৎসক তড়িঘড়ি প্রেসক্রিপশন থেকে সেই ইনজেকশনের নামটি কেটে দিয়েছেন। পরিকল্পনা মাফিক তার দিদিকে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপী সরকার বলেন, পরিকল্পনা করে হাসপাতাল সুপার তাদের দলের মহিলা নেত্রীকে মেরে ফেলেছে। তার পদত্যাগের পাশাপাশি এই ঘটনায় জড়িতদের প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।
বালুরঘাট হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, ওই রোগীর সুগার লেভেল হাই ছিল এমনটাই জানিয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসক। তবে প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গড়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

