বালুরঘাট, ২৫ এপ্রিল ———– বীরভূমের অনুকরণে এবারে বালি মাফিয়ারাজ দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে। স্থানীয় নেতৃত্বদের যোগসাজশে একপ্রকার রাজ্যসড়ক দখল করে অবৈধ বালি ডাম্পিং গড়ে তুলে দেদার কারবার চালাচ্ছে বালি মাফিয়ারা। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কুমারগঞ্জের সমজিয়াতে বেশ কিছুদিন ধরে এমন অবৈধ কারবার চললেও কার্যত নাকে তেল দিয়েই ঘুমোচ্ছে স্থানীয় ব্লক ও পুলিশ প্রশাসন। এদিকে দিন রাত এককরে বালি মাফিয়াদের এমন দৌরাত্ম্যে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। রাজ্য সড়ক দখল করে এমন অবৈধ কারবার কোনভাবেই চলতে পারেনা, বললেন জেলাশাসক।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বাংলাদেশ সীমান্ত অধ্যুষিত এলাকা কুমারগঞ্জ ব্লক। আর ওই ব্লকের সমজিয়া এলাকাতেই আত্রেয়ী নদী ভাগ করেছে বাংলাদেশ ও ভারতকে। বাংলাদেশ থেকে বয়ে নিয়ে আসা আত্রেয়ীর পলি ও বালি প্রধানত ওই কুমারগঞ্জেই জমা হয়। আর যে কারণে কুমারগঞ্জের বিস্তৃর্ণ এলাকার বালির চাহিদা শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুরেই নয়, পাশ্ববর্তী উত্তর দিনাজপুর ও মালদা জেলাতেও রয়েছে চাহিদা। আর যাকে কাজে লাগিয়েই কুমারগঞ্জে ক্রমশঃ বাড়তে শুরু করেছে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। সরকারী খাতায় এক বা দুটো বালির খাদান থাকলেও বেসরকারি হিসাব তা পঞ্চাশকেও ছাড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে একপ্রকার পকেটে পুরেই চলছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ কারবার। যা করতে গিয়েই এর আগে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছিলেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সরকারী কলেজের প্রাচীর ভেঙে ফরেস্টের মধ্যে অবৈধভাবে বালি মজুত করা। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি রীতিমতো তোলপাড় হয়েছিল। এবারে সেই একই কায়দায় সমজিয়া এলাকাতেও অবৈধভাবে বালি মজুত শুরু করেছে মাফিয়ারা। রীতিমতো রাজ্য সড়ক দখল করে বিস্তৃর্ণ এলাকায় অবৈধভাবে ডাম্পিং গড়ে তুলেছে বালি মাফিয়ারা। আশপাশের একাধিক নদীর পাড় থেকে বালি তুলে এনে যেখানেই মজুত করছে অবৈধ বালি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেসিবি ও ডাম্পার লাগিয়ে মাফিয়াদের এমন কারবার যেন বীরভূমের বেতাজ বাদশাদেরও হার মানাচ্ছে। এদিকে সীমান্ত এলাকায় বালি মাফিয়াদের এমন দৌরাত্ম্যে বিগত বেশকিছুদিন ধরে নাভিশ্বাস উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। রাজ্য সড়ক দখল করে এমন কারবারের জেরে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে পথ চলতি মানুষজনেরও। দীর্ঘ বেশ কিছুদিন ধরে এলাকাতে এই অবৈধ কারবার চললেও কেন নিশ্চুপ রয়েছে ব্লক ও পুলিশ প্রশাসন তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। যদিও অনেকে বলছেন প্রশাসনের একাংশ ও স্থানীয় নেতৃত্বদের গোপন যোগসাজশেই চলছে এই কারবার।
সুনীল বর্মন নামে স্থানীয় এক টোটো চালক বলেন, রাস্তার ধারে এভাবে বালি ফেলার কারনে দুর্ঘটনা বাড়ছে। কিছু লোকজন বেশ কয়েকদিন ধরে এভাবে বালি নিয়ে এসে জমা করছেন এলাকায়।
সুশীল হেমব্রম নামে এক জেসিবির চালক বলেন, ডাম্পারে বালি বোঝাই করবার জন্যই ইটাহার থেকে এসেছেন।
ডাম্পিং এর কাজে নিযুক্ত এক ব্যক্তি মজিদুর মন্ডল বলেন, ঘটনা সঠিক নয়। বৈধভাবে ব্যবসা করছেন তারা।
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, রাস্তা দখল করে এভাবে কেউ কোন কাজ করতে পারে না। অবিলম্বে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

