, বালুরঘাট, ৪ সেপ্টেম্বর——— বিপ্লবেই কিস্তিমাত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ। জায়গা না পেয়ে গরহাজির জেলা তৃণমূল সভাপতি। সোমবার দক্ষিন দিনাজপুর জেলাপরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠনে দেখা মিলল এমনই চিত্রের। তবে এদিন সভায় তৃণমূলের এক সদস্য ছাড়াও গরহাজির ছিলেন বিজেপির তিন বিধায়কও। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় তৃণমূল তাদের সদস্যদের মধ্য থেকেই স্থায়ী সমিতিগুলি গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। তবে স্থায়ী সমিতি গঠনের এই সভায় জেলা পরিষদ সদস্য তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকারের গরহাজিরা নিয়ে যথেষ্টই জল্পনা ছড়িয়েছে খোদ দলের নেতা কর্মীদের মধ্যেই। যদিও এনিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বদের সাফাই, অসুবিধা থাকবার কারনেই এদিন তিনি উপস্থিত হতে পারেন নি।
জানা যায়, পুর্ব নির্ধারিত দিন অনুযায়ী এদিন ছিল জেলা পরিষদের ন’টি স্থায়ী সমিতির গঠনের দিন। যে সদস্যদের নাম রাজ্যের নির্দেশেই একপ্রকার চূড়ান্ত হয়েছে। কোন কমিটিতে কারা সদস্য থাকবেন সেই তালিকা এদিন সামনে আসতেই রীতিমতো হইচই পরিস্থিতি তৈরি হয়। যেখানেই দেখা গেছে নয়টি স্থায়ী সমিতির একটিতেও ঠাই হয়নি জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃনাল সরকারের। যাকে ঘিরেই জোর গুঞ্জন ছড়ায় এদিন উপস্থিত হওয়া নেতা কর্মীদের মধ্যে। শুধু তাই নয়, মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের অনুগামীরা গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী সমিতি গুলিতে জায়গা করে নেওয়ায় কিছুটা দুশ্চিন্তার ভাজ দেখা গিয়েছে দলের একাংশ নেতা কর্মীদের মধ্যে। এখানেই শেষ নয়, দলনেতা হিসেবে বিপ্লব অনুগামী আমজাদ মন্ডল এবং এবারে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করা শংকর সরকারকে মেন্টর করার ঘটনা নিয়েও রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মৃণাল অনুগামীরা। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদের সভাধিপতি নির্বাচন নিয়ে প্রথম থেকেই শুরু হয়েছিল নানা জল্পনা। সাধারণ ওই আসনের অন্যতম দাবিদার হিসাবে তুলে ধরা হয়েছিল জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার, যুব সভাপতি অম্বরিশ সরকার ও অর্পিতা ঘনিষ্ঠ কৌশিক মাহাতোর নাম। কিন্তু সভাধিপতি নির্বাচনে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে রাজনীতিতে উঠে আসা আদিবাসী মুখ চিন্তামনি বিহাকে সামনে এনে রাজনৈতিক দুরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন বিপ্লব মিত্র। যিনিও তার অনুগামী বলেই পরিচিত। এরপরে স্থায়ী সমিতি গঠনের পাশাপাশি মেন্টর ও দলনেতা করা নিয়েও দলের ভিতরে যথেষ্টই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন বিপ্লব মিত্র। কিন্তু এদিন এককভাবে তার অনুগামীদের সামনে আসবার ঘটনায় রীতিমতো ধরাশায়ী হয়েছেন জেলা সভাপতির অনুগামীরা। শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদের নয়টি স্থায়ী সমিতির একটিতেও জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার জায়গা না পাওয়ায় হতবাক হয়েছেন অনেকেই। যে কারনেই এদিনের এই সভায় গরহাজির থেকেছেন মৃণাল সরকার বলেও মনে করছেন অনেকে। যদিও এসব যুক্তি মানতে চায়নি তৃণমূল নেতৃত্বরা। তাদের দাবি দলের নির্দেশেই এসব কমিটি গঠন হয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্তামনি বিহা বলেন, এদিন সুষ্ঠু ভাবে নয়টি স্থায়ী সমিতি গঠন হয়েছে। পরবর্তীতে কর্মাধ্যক্ষদের নাম ঘোষণা করা হবে।
মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, দলের নির্দেশেই জেলা পরিষদের সমস্ত স্থায়ী সমিতি গঠন হয়েছে। তবে নিজস্ব কিছু অসুবিধা থাকবার কারনেই জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য মৃণাল সরকার উপস্থিত হতে পারেন নি।

