প্রতিবছরের মতো এবারেও ধামসা-মাদলের বোলে মুখরিত হয়ে উঠলো বাদনাগরা ফুটবল ময়দান। মাদলের বোলে এবং আদিবাসী পুরুষ ও মহিলাদের ছন্দবদ্ধ নাচের তালে মেতে উঠলেন আদিবাসীরা।

উত্তরবঙ্গ কলকাতা খেলা দক্ষিণবঙ্গ দেশ প্রথম পাতা বিদেশ বিনোদন রবিবার রাজ্য শরীর ও স্বাস্থ্য

গাজোল,১৪ অক্টোবর:—————-
গাজোলে র বাদনাগরা ফুটবল ময়দানে বলরামপুর ফ্রেন্ডস ক্লাবের উদ্যোগে এদিন অনুষ্ঠিত হলো আদিবাসী ছাতা মেলা। মহালয়া উপলক্ষে আয়োজিত এই উৎসব নামে আদিবাসী ছাতা মেলা হলেও কালক্রমে এই উৎসব পরিণত হয়েছে সব শ্রেণীর মানুষের মেলায়।
বলরামপুর ফ্রেন্ডস ক্লাবের কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র বর্মন জানালেন,প্রতি বছর মহালয়ার দিন অনুষ্ঠিত হয় আদিবাসীদের উৎসব ছাতা মেলা। এবার এই মেলা ৫৭ বছরে পা দিল। এই মেলার মূল আকর্ষণ আদিবাসী নৃত্য। বিভিন্ন জায়গা থেকে আদিবাসী পুরুষ এবং মহিলাদের দল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তাঁদের পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় হারমোনিয়াম, মাদল, ধামসা এবং সাইড ড্রাম। এবছরও নৃত্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পুরুষদের জন্য দাঁসাই এনেচ এবং মহিলাদের জন্য থাকছে লাগরে এনেচ। প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় এবং স্থান অধিকারীদের যেমন পুরস্কার দেওয়া হয় তেমনি অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। এবার হবিবপুর, বামন গোলা, নালাগোলা, হিলি, বালুরঘাট, সিঙ্গাবাদ, পুরাতন মালদা, হরিরামপুর, দৌলতপুর প্রভৃতি এলাকা থেকে ২০ টি দল অংশ নিয়েছে। বিকেল চারটে থেকে শুরু হয়েছে আদিবাসী নৃত্য এবং আদিবাসী গান প্রতিযোগিতা। রাতে অনুষ্ঠিত হবে যাত্রানুষ্ঠান। ছাতা মেলা কে কেন্দ্র করে বসেছে বিভিন্ন ধরনের দোকান। রয়েছে মনোরঞ্জনের নানা রকম ব্যবস্থা।
ছাতা মেলা উৎসব কমিটির সম্পাদক দিলীপ মুর্মু জানালেন, মূলত আদিবাসীদের একত্রিত করার জন্য আজ থেকে ৫৭ বছর আগে এই ছাতা মেলা শুরু করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই গাছের ডাল ঘুরিয়ে আদিবাসীদের একত্রিত হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। ছাতা মেলায় যে দুটি ছাতাকে পুজো করা হয়। এর মধ্যে দিয়েই আদিবাসীদের বার্তা দেওয়া হয়। আদিবাসী ছাতা মেলা একসময় আদিবাসীদের নিজস্ব সংস্কৃতি থাকলেও, দীর্ঘদিন ধরে এই মেলা সর্বজনীন মেলাতে পরিণত হয়েছে। আমরা যাতে খুব সুন্দর ভাবে মেলা পরিচালনা করতে পারি তার জন্য গাজোল থানা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এত বড় অনুষ্ঠান পালন হলেও সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কোনরকম সাহায্য করা হয় না। আমরা চাই আদিবাসীদের এই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রাজ্য সরকার এগিয়ে আসুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *