পেটে লাথি গর্ভস্থ ভ্রুনের মৃত্যু। স্ত্রীর কাছে দাবি করেছিল 3 লক্ষ টাকা। সেই টাকা বাবার বাড়ি থেকে না নিয়ে আসায় ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বধুর পেটে লাথি। অভিযুক্ত বেসরকারি সংস্থার স্বাস্থ্যকর্মী স্বামীকে গ্রেফতার করল রায়গঞ্জ মহিলা থানার পুলিশ।
পিতৃ পক্ষে বাবার লোভে বলি হল গর্ভস্থ সন্তান (ভ্রুণ) মাতৃ পক্ষের শুরুতেই গ্রেফতার বাবা। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মৃত গর্ভস্থ ভ্রুনের বাবাকে এদিন সকালে গ্রেফতার করলো রায়গঞ্জ মহিলা থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম রনি সরকার বাড়ি রায়গঞ্জ থানার কর্ণজোড়া ফাঁড়ির অন্তর্গত কমলাবাড়ি দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের শশীহার গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃতের নাম রনি সরকার (২৪) পেশায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের প্যাথলজি বিভাগের ল্যাব টেকনিশিয়ান। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ৮৫/১১৫ (২)/১০৯(১)/৮৯ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এদিন বিকেলে ধৃতকে রায়গঞ্জ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। রায়গঞ্জ সিজেএম কোর্টের সরকারি আইনজীবী দিপ্তেশ ঘোষ বলেন,“ধৃতের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন স্ত্রীকে খুন করার চেষ্টা ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে রায়গঞ্জ মহিলা থানার পুলিশ। বিচারক ধৃতকে জেল হেফাজতে নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দুই বছর আগে সংশ্লিষ্ট গ্রামের ওই বাসিন্দা মৌমিতা বিশ্বাসের সঙ্গে রনি সরকারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় এক লক্ষ টাকার নগদ, একটি সোনার আংটি ও আসবাবপত্র দেওয়া হয় মেয়ের পরিবারের তরফ থেকে। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই ফের তিন লক্ষ টাকা দাবি করে ছেলের পরিবারের তরফ থেকে। মৌমিতাকে বারবার চাপ প্রয়োগ করে অভিযুক্ত স্বামী রনি সরকার। তার বক্তব্য, বাড়ির সামনে একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি খোলার জন্য তার বাবার বাড়ি থেকে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে হবে। আর সেই টাকা না নিয়ে আশায় যাবতীয় গন্ডগোলের সূত্রপাত। ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বধূর পেটে লাথি মেরে গুরুতর জখম করে দেয়। সেখানেই রক্তপাত হতে শুরু করে। মেয়ের পরিবারের লোকেরা খবর পেয়ে ওই বধূকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করলে গতকাল গর্ভপাত (abortion) করা হয়। মৃত ভ্রুণ বের করে ওই মহিলাকে তিন ইউনিট রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কর্তব্যরত গাইনি ওয়ার্ডের চিকিৎসকের বক্তব্য, পেটে লাথি মারার জন্যই ওই অন্তঃসত্ত্বা বধূর ছয় মাসের গর্ভস্থ ভ্রুনের মৃত্যু হয়েছে।

