পড়াশুনোর পাশাপাশি মাটি, জল, রং নিয়ে কাজ করতে ভালবাসে অঙ্কিত

উত্তরবঙ্গ কলকাতা দক্ষিণবঙ্গ দেশ প্রথম পাতা বিদেশ বিনোদন রবিবার রাজ্য শরীর ও স্বাস্থ্য

আলিপুরদুয়ার: পড়াশুনোর পাশাপাশি মাটি, জল, রং নিয়ে কাজ করতে ভালবাসে অঙ্কিত। ছোট থেকেই পাল পাড়ার প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিল অমোঘ। প্রতিমা শিল্পীরা কীভাবে প্রতিমা তৈরি করছে তা দেখতো সে।এরপরে আট বছর বয়স থেকে ছোট ছোট মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করে সে। বর্তমানে বাড়িতে বড় দুর্গা প্রতিমা তৈরি শুরু করেছে সে।

 

ছেলে পড়াশুনো মন দিয়ে করে ভাল চাকরি করুক চান অঙ্কিতের বাবা, মা। দুর্গা মূর্তি তৈরি করছে অঙ্কিত, এই দেখে প্রথমে ছেলের পড়াশুনোর ক্ষতি হচ্ছে ভেবে রাগ করলেও, বর্তমানে ছেলের শিল্পীসত্ত্বাকে অগ্রাহ্য করতে পারেননা অঙ্কিতের মা, বাবা।অঙ্কিত দেবনাথ অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়া। যখন সে মূর্তি তৈরি করতে বসে তখন তাঁর পাড়ার মানুষেরা ছুটে আসে তা দেখতে।
জানা যায়,ছোটবেলা থেকেই মাটি দিয়ে খেলাধুলা করত সে।আলিপুরদুয়ার শহরের দ্বীপচর এলাকার বাসিন্দা অঙ্কিত দেবনাথ।তার বাবা অনুকুল দেবনাথ সবজি বিক্রেতা।ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে তার এই খেলা বদলে যায় তার মূর্তি গড়ার নেশায়। চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে সে শুরু করে দেবদেবীর মূর্তি বানানোর কাজ। তাঁর গড়া লক্ষ্মী প্রতিমা দিয়ে,তাঁর মা বাড়িতে কোজগরী লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন করেন। ছেলে যেদিন থেকে প্রতিমা গড়ে দেয়, তারপর থেকে আর কুমোরটুলি মুখো হননি তার মা লক্ষী প্রতিমার জন্য। বাবা সামান্য সব্জি বিক্রেতা, তার একার আয়ে চলে পরিবার। প্রথম দিকে প্রতিমা বানানোর খরচ ও ছেলের পড়াশুনার কথা মাথায় রেখে ছেলেকে মানা করলেও পরে তার একাগ্রতার সামনে হার মানেন বাবা মা দুজনেই। প্রতিমা বানানোর সরঞ্জাম কিনে এনে দেন বাজার থেকে।
আর সেগুলো দিয়েই তার সৃষ্টির কাজে মগ্ন থাকে অঙ্কিত। সকালে স্কুলে যায় সময়মত। সেখান থেকে ফিরে খাওয়াদাওয়া করেই লেগে যায় প্রতিমা তৈরীর কাজে।অঙ্কিত দেবনাথ জানায়, “এবারে তো পুরোহিত এনেই পুজো হবে পাড়ায়। আমার স্বপ্ন শিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার।”

অঙ্কিতের হাতে তৈরি মূর্তি দিয়ে দ্বীপচর এলাকায় পুজো হচ্ছে। চারবছর থেকে এই পুজো হচ্ছে। দ্বীপচরে পুজোতে অনেক মানুষ ভিড় জমান অঙ্কিতের হাতের তৈরি মূর্তি দেখতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *