, বালুরঘাট, ৬ আগস্ট, দক্ষিণ দিনাজপুর————–——-দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার নওগাঁ এলাকায় তিন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে এই তিনজনকে আটক করে তপন থানার পুলিশ।ঘটনার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।এদিকে তৃণমূল বিএসএফের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছে, অন্যদিকে পাল্টা অভিযোগ এনেছে বিজেপি।পুলিশ অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে তদন্ত নেমেছে।
তপন থানার রামপাড়া চ্যাচরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নওগাঁ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তপন থানার পুলিশ শামসুল আলম (৪১), শফিকুল আলী (৪৫)ও শাহাজান আলী (৩৮)নামে তিন আত্মীয় বাংলাদেশিদের গ্রেফতার করে।ধৃতদের সকলেরই বাড়ি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৮ সাল নাগাদ তারা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং তপন থানার নওগাঁ এলাকায় বসবাস শুরু করে।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে তারা আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সহ একাধিক ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে স্থানীয় বাসিন্দা সেজে বসবাস করছিল।গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে তাদের আটক করে। প্রথমে তারা নিজেদের বাংলাদেশি বলে স্বীকার না করলেও পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের চাপে ভেঙে পড়ে এবং সব তথ্য প্রকাশ করে।ধৃতদের বালুরঘাট জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল অভিযোগ করে বলেন,বিএসএফের গাফিলতির কারণেই সীমান্ত পেরিয়ে এত বছর ধরে তারা ভারতে বসবাস করতে পেরেছে।কেউ তাদের নিজের ভোট যাকে খুশি দেবে সেটা কিসের অন্যায়,এটা বলা ঠিক নয়।”
এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন জেলার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন,” “তৃণমূলই এই সমস্ত বাংলাদেশিদের ঘরে রেখেছে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক শক্তিশালী করতে।এখন পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। তৃণমূল নিজেদের দোষ ঢাকতেই বিএসএফকে দোষ দিচ্ছে।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ সরকার জানিয়েছেন, “গোপন সূত্রে পাওয়া খবরে তৎপর হয়ে পুলিশ ওই তিন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে। যথাযথভাবে তাদের আদালতে তোলা হয়েছে।”
এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে কিভাবে তারা অনায়াসে ভারতে বসবাস করতে পারল? প্রশাসনের পাশাপাশি বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। রাজনীতির রঙে রঙিন হলেও, সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে।

