বালুরঘাট, ১৪ ডিসেম্বর —–— দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটি গঠনকে ঘিরে দীর্ঘদিনের অরাজকতার অভিযোগে অবশেষে নড়েচড়ে বসলো রাজ্যের যুব ও ক্রীড়া দপ্তর। চলতি মাসের ৫ তারিখে সিংহ ইন্ডিয়ান্স ক্রিকেট একাডেমির তরফে করা লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলাশাসককে কড়া ভাষায় চিঠি পাঠান রাজ্যের যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের জয়েন্ট সেক্রেটারি। অবিলম্বে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটি গঠন নিয়ে অরাজকতা ও নানা বেনিয়মের পুর্নাঙ্গ রিপোর্ট জরুরী ভিত্তিতে পেশ করবার কড়া নির্দেশও দেওয়া হয়েছে জেলাশাসককে। যে চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও অভিযোগকারী সিংহ ইন্ডিয়ান্স ক্রিকেট একাডেমির সভাপতি শুভ কুমার ঘোষের কাছেও। যা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়।
প্রসঙ্গত, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটি গঠনের বিতর্ক শুরু হয় গত ১৪ সেপ্টেম্বর। অভিযোগ, খেলার সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় সংগঠনগুলোকে অন্ধকারে রেখে নিজেদের স্বার্থে একতরফাভাবে কমিটি গঠন করে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। যা নিয়ে ওই সংগঠনকে ঘুঘুর বাসা আখ্যা দিয়ে গোটা বালুরঘাট শহরজুড়ে পড়ে নানা পোস্টারও। শুধু তাই নয়, ঘটনা নিয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে ওই সংগঠনের সভাপতি তথা জেলাশাসকের কাছে। এরই মাঝে ২৬ নভেম্বর স্টেডিয়ামে শতাধিক সমাজবিরোধীদের উপস্থিতিতে একটি মিটিং ডেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থায় কার্যকরী কমিটিও গঠন করে ওই কতিপয় ব্যক্তি বলে অভিযোগ। সঠিক নিয়ম মেনে যে মিটিং সম্পন্ন হয়নি বলে অভিযোগ তুলে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন সংগঠনের বিদায়ী সম্পাদক অমিতাভ ঘোষ। এদিকে প্রথম থেকে চলা ওই সংগঠনের একাধিক বেনিয়মের প্রমান সহ লিখিত অভিযোগ নিয়ে সিংহ ইন্ডিয়ান্স দ্বারস্থ হন রাজ্যের যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের। শুধু তাই নয়, এনিয়ে সংগঠনের সভাপতি তথা জেলাশাসকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বেরও অভিযোগ তোলা হয়েছে তাদের তরফে। চলতি মাসে যে অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে রাজ্য যুব ও ক্রীড়া দপ্তর। অবিলম্বে এসবের জবাব চেয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক কে কড়া ভাষায় চিঠি করেন যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের জয়েন্ট সেক্রেটারি। যার কপি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকেও। এদিন যে চিঠি হাতে পেতেই কিছুটা উচ্ছ্বসিত হয়েছেন সিংহ ইন্ডিয়ান্স ক্রিকেট একাডেমি।
তাদের সভাপতি শুভ কুমার ঘোষ জানান, “অবশেষে ন্যায়বিচারের পথে এগোচ্ছে বিষয়টি। রাজ্যের তরফ থেকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা আশাবাদী যে, জেলা ক্রীড়া সংস্থায় স্বচ্ছতা এবং নিয়ম প্রতিষ্ঠা হবে।”
এদিকে যুব দপ্তরের চিঠি জেলা প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। বেনিয়মের বিরুদ্ধে রাজ্য সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়ায় স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীরাও উচ্ছ্বসিত। তবে প্রশাসনের রিপোর্ট এবং এর ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, তা নিয়ে এখন জেলাজুড়ে উৎসুক দৃষ্টি।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবিষ্যৎ কীভাবে গড়ে উঠবে, তা নির্ভর করছে রাজ্য সরকারের এই হস্তক্ষেপের সঠিক প্রয়োগের ওপর।

