একদা বাংলাদেশের বনিকেরা বানিজ্য করতে এসে তরী ভীরিয়েছিল রায়গঞ্জের কুলিক নদী বন্দরে। সেসময় বনিক সমাজের এক সওদাগর দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে নদীর ধারে রাইগঞ্জ বন্দরে প্রচলন করেন দূর্গাপুজার

উত্তরবঙ্গ কলকাতা দক্ষিণবঙ্গ দেশ প্রথম পাতা বিদেশ বিনোদন রবিবার রাজ্য শরীর ও স্বাস্থ্য

একদা বাংলাদেশের বনিকেরা বানিজ্য করতে এসে তরী ভীরিয়েছিল রায়গঞ্জের কুলিক নদী বন্দরে। সেসময় বনিক সমাজের এক সওদাগর দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে নদীর ধারে রাইগঞ্জ বন্দরে প্রচলন করেন দূর্গাপুজার। এটা প্রায় ছশো বছর আগেকার কথা। সেই পুজো আজ রায়গঞ্জ শহরের বন্দর এলাকার বাসিন্দাদের ” রাইগঞ্জ আদি দূর্গা পুজো “। সাধারন মানুষ থেকে এলাকার ব্যাবসায়ীরা চাঁদা দিয়ে এই পুজোর ব্যায় নির্বাহ করেন। অধুনা বাংলাদেশের বনিক সমাজ বড় বড় নৌকো আর বজরা নিয়ে বানিজ্য করার জন্য নোঙর করতেন কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে। কথিত আছে তারাই এই রাইগঞ্জ আদি সার্বজনীন দূর্গাপুজোর প্রচলন করেন। এরপর কুলিক নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। নদীর নাব্যতাও কমেছে অনেক। এখন আর আসেননা বনিকেরাও। তবে তাদের প্রচলন করা পুজো কিন্তু বন্ধ হয়ে যায়নি। এলাকার বাসিন্দারাই চাঁদা তুলে সার্বজনীনভাবে দূর্গাপুজো করে চলেছেন। রাইগঞ্জ আদি সার্বজনীন দূর্গোৎসব কমিটি প্রবীন সদস্য ভবানী প্রসাদ সাহা জানালেন, তাদের ছয় পূর্বপুরুষও জানাতে পারননি এই পুজোর বয়স কত! তবে এখানকার দেবী খুবই জাগ্রত, নিয়মনিষ্ঠা সহকারে পুজো করা হয় এখানে। মহাঅষ্টমীতে ৮ থেকে ১০ হাজার ডালা ভোগ পরে এই মন্দিরে। পুজোকমিটি সম্পাদক রূপেশ সাহা জানালেন, পুজোর প্রচলন নিয়ে নানা গল্প কাহিনী শোনা গিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বানিজ্য করতে আসা বনিকেরা এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন, আবার কেউ বলেন। পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে এক সাধু এসে এখানে পঞ্চমুন্ডির আসন পেতে পুজো শুরু করেছিলেন। তবে দেবী দূর্গার যে বেদীতে পুজো হয় সেই বেদী কিন্তু বানরাজাদের আমলের তৈরি ছোট ছোট ইট দিয়ে নির্মিত। যেখানে চাঁদ ও শঙখের ছবি রয়েছে। রাইগঞ্জ আদি বন্দরের দূর্গাপুজো নিয়ে রায়গঞ্জবাসীর একটা আলাদা উন্মাদনা রয়েছে। জাগ্রত বলে বহু দূরদূরান্ত থেকে পূন্যার্থীরা আসেন দূর্গাপুজোয় ভোগ আর অঞ্জলী দিতে। এখানে দেবীর কাছে মানত করলে তা পূরন হয়। আর যে কারনে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। এবারেও শুরু হয়েছে পুজোর প্রস্তুতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *