আজব কান্ড! জ্বরে ভর্তি রোগী আটদিন ধরে নিখোঁজ বালুরঘাটের সরকারী হাসপাতাল থেকে। প্রশ্ন চিহ্নে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, লাঠিহাতে বিক্ষোভ আদিবাসী মহিলাদের

উত্তরবঙ্গ কলকাতা খেলা দক্ষিণবঙ্গ দেশ প্রথম পাতা বিদেশ বিনোদন রবিবার রাজ্য শরীর ও স্বাস্থ্য

 

 বালুরঘাট, ১৪ জুলাই —— আজব কান্ড! সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা বেষ্টনী এড়িয়ে আটদিন ধরে নিখোঁজ পঞ্চাশোর্ধ রোগী। হুশ নেই হাসপাতাল কতৃপক্ষের। প্রতিবাদে লাঠি হাতে মারমুখী আদিবাসী মহিলাদের বিক্ষোভ বালুরঘাটে। রবিবার দুপুরে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বিক্ষোভকারী মহিলাদের দাবি, নিরাপত্তার নামে সরকারী হাসপাতালে অযথা হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং নিখোঁজ রোগীকে অবিলম্বে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

হাসপাতাল সুত্রের খবর অনুযায়ী , বালুরঘাট ব্লকের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের এক মাইল গ্রামের বাসিন্দা সুনীল ওরাও কে গত ৫ তারিখে জ্বর নিয়ে বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান তার পরিবারের লোকেরা। শনিবার যাকে খাবার দিয়ে দেখেও যান বাড়ির লোকেরা। অভিযোগ, এরপরেই হাসপাতাল থেকে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান পঞ্চাশোর্ধ ওই রোগী। বিষয়টি প্রথমে মানতে না চাইলেও, সিসিটিভি দেখে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এদিকে এনিয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও নিখোঁজ ব্যক্তি সম্পর্কে হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও পুলিশ কোন সদুত্তর দিতে পারেনি রোগীর পরিবারকে। উলটে রোগীর পরিজনদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে নার্স ও নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। যার বিরুদ্ধেই এদিন কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে আমের ডাল ও লাঠিসোটা হাতে নিয়ে হাসপাতালে চড়াও হন রোগীর পরিবারসহ কয়েকশো আদিবাসী মানুষজন। মারমুখী যে আদিবাসী মানুষদের বিক্ষোভেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বর। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকারী হাসপাতালের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে আট দিন ধরে নিখোঁজ থাকা রোগীকে অবিলম্বে তাদের কাছে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু তাই নয়, কর্তব্যে গাফিলতির পিছনে যারা যুক্ত রয়েছে তাদের প্রত্যেককে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।
এদিন দুপুরে হাসপাতালে আদিবাসীদের যে বিক্ষোভের খবর পেয়েই এলাকায় পৌছায় বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাজার নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করবার পাশাপাশি লিখিত অভিযোগ নিয়ে এব্যাপারে উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিলে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

নিখোঁজ রোগীর স্ত্রী বিশন ওরাও বলেন, চিকিৎসার জন্য তারা তাদের রোগীকে সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। সেখান থেকে রাতের অন্ধকারে একজন রোগী কিভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল। যানিয়ে লিখিত অভিযোগের ৮ দিন পরেও কোন হুশ নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অবিলম্বে তাদের রোগীকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় ফেরাতে হবে।

বিক্ষোভকারী ধনেশ মাহাত বলেন, হাসপাতালে ঢুকবার ক্ষেত্রে অযথা সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। আর তাদের নজর এড়িয়ে কিভাবে একজন রোগী হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে গেল। এর পিছনে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তারা চান তাদের রোগীকে।

বালুরঘাট হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার অপূর্ব কুমার মির্ধা বলেন, বিষয়টি ভাববার রয়েছে। কারো কোন গাফিলতি রয়েছে কিনা তা উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *